"রুটিন "
লিখেছেন লিখেছেন জিহর ২১ মে, ২০১৬, ১০:০২:৪৬ সকাল
রুটিন
.
তালুকদার জহির
১
ধুর, কেন যে সুমনের কথায় ভালো ছাত্রির সাথে প্রেম করতে গেলাম! বিদ্যুৎহীন এমন রাতে ছাদে বসে কথাটুকু বলার সুজগ দেয় না! ওর নাকি রাত জেগে কথা বলা অপছন্দ। সারা দিনের সব কিছু ও রুটিন মাফিক করে!
এমনিতেই গরম, তারপর যদি রোমান্সও মিস হয়...!
ঠিক এমন সময় মেঘ না চাইতে বৃষ্টি নিয়ে কনিকার sms এলো। মিস ইউ....ব্যাস, এইটুকুই
আমি ওরে জান বলে ডাকার সুজোগটাও পাইনি। এতে নাকি আবার কনিকার এলার্জি আছে।
নাহ্, এবার একটা বিহীত করতেই হবে। সুমন বদমাইশই এর সমাধান দিতে পারবে, ওকে ফোন দিলাম....
সুমন মহা বুদ্ধিমান, সো ওর কথা মতো কনিকাকে মেসেজ দিয়ে রাখলাম যাতে সকাল সকাল কর্ম উদ্ধার হয়!
২
কনিকাকে ৯ টায় আসতে বলেছিলাম! কিন্তু মহাদেবী দশটাই বাজালো... আমি প্রমাদ গুনছি, বস না আবার চাকরির "বারটা" বাজায়!
কনিকা : সরি রবিন, তোমার অফিস টাইম নষ্ট করলাম!
রাতের বুদ্ধি মতো কথা শুরু করলাম...
আমি: আমরা আজ অত্যন্ত সিরিয়াস বিষয়ে কথা বলবো! সো, মন দিয়ে শোন...
কনিকা : হ্যা বলো, বাট তাড়াতাড়ি, আজিজ সারের ক্লাস ধরতে হবে...
আমি : তোমার মোবাইলটা একটু দাও...
কনিকা ওর সেটটা দিয়ে আমার দিকে আশ্চর্য ভাবে তাকিয়ে রইলো...
আমি বলতে শুরু করলাম... অনেক ভেবে চিন্তে স্থির করলাম যে আমাদের সম্পর্কটা এভাবে চলবে না...
কনিকা : তো কিভাবে চলবে শুনি...?
আমি : ব্রেকাপ চাই...
কনিকা : মানে?
আমি : বাংলায় তো বলেছি...
কনিকা : তুমি ঠিক আছো তো?
আমি : 100%
কনিকা : কাজের কথা বলো...
আমি : বল্লাম তো...
কনিকা : এমন কি হয়েছে যে আমাদের ব্রেকাপ করতে হবে? জানোনা তোমাকে কত্তো ভালোবাসি..!
আমি : তুমি আমাকে ভালোবাসো না। আজিজ সারকে বাসো! তাইতো এসেই তাড়াদিচ্ছ যাবার জন্য।
কথাগুলো শুনে কনিকা হেসে উঠলো...
আমি : হাসির কি হলো এখানে...?
কনিকা : তুমি খালি নতুন নতুন ইসু খোজ, তাই না...?
আমি : আরো আছে, তুমি আমার সাথে কোনদিনও রাতে কথা বলোনি...
কনিকা : আর কি কি অভিযোগ আছে? জাহাপনা...
আমি : এতো কথা বলার সময় নেই, ব্রেকাপ ব্যাস ব্রেকাপ ...
কনিকা : সত্যিই তো..? পরে কিন্তু পিছে পিছে ঘুরলে ভাইয়াকে দিয়ে মার খাওবো...
আমি : এহ্ আসছে মিস ওয়ার্ল্ড, আমি নিজে থেকে জেনে বুঝে ব্রেকাপ করছি, সো গুড বাই....
কনিকা : ওকে, মোবাইলটা দাও...
আমি : ওটা দেব বলে নেইনি...
কনিকা : কেনো?
আমি : এটা তোমার সৃতি চিহ্ন হয়ে থাকবে। তাছাড়া...
কনিকা : তাছাড়া কি?
আমি : তোমার পিছে অনেক ইনভেস্ট করেছি। সেগুলোর সম্পূরক হিসেবেও ধরতে পারো...!
কনিকা : মানে..?
আমি : মানে সহজ। তোমাকে রেস্টুরেন্টে খাওনো, ফুসকা-চটপটি, আইসকৃম বিল, তোমাকে নিয়ে তো ঘুরতামই... মাঝে মাঝে তোমার বিচ্ছু ভাগিনা দুটোকেও যোগ করতে! যার একটাকে আবার কোলে রাখতে হতো আমারি...! আহ্, সেদিনের কষ্ট মনে করতে চাইনা, যেদিন তোমার ছোট ভাগিনাটা আমার কোলেই হিসু করেদিলো...
কনিকা : গতোকালো তো তোমার মাথা ঠিক ছিল, একরাতের মাঝে এতো পরিবর্তন...! বুঝেছি, তোমার চাকরি পাওয়ার পর নতুন পাখা গজাইছে।
আমি : তোমার কোন থ্রেটে লাভ নেই। কেটে পড়ো....
কনিকা : ওকে সিমকার্ড দাও, আমার ক্লাসে যেতে হবে...
আমি : তার মানে ব্রেকাপ পাক্কা ... ইয়াহু, ইয়েস, ইয়েস,ইয়েস
কনিকা : সামনের মাসে দুলাভাই দেশে ফিরছেন। আম্মু বলেছেন যে, সে এলেই আমায় বিয়ে দেবেন। পাত্র ঠিক করা আছে মনে হয়! "মাইন্ড ইট"
আমি : যাও যাও, তোমার চ্যাপটার ফুল ফরমাট দিয়েছি....
৩
কনিকা সেদিন চলে গিয়েছিল। এবং একবারের জন্যও পিছু ফিরে চায়নি...
এমনকি ওর চোখে সামান্য জলকণা পর্যন্ত ছিলো না।
কনিকার দুলাভাই আসার পর সত্যিই ওর বিয়ে হয়ে যায়...
এবং আমি আজীবনের জন্য রুটিন মাফিক চলার প্রেক্টিস শুরু করি।
কারন কনিকা এখন আমার ঘরেই ঘাটি গেড়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১০১৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ সেই মোবাইলটা কি ফেরত দিয়েছেন ? নাকি আরও দামী নিয়ে নিয়েছে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন